আজকের আমাদের আলোচনার বিষয়, ভারতের 10 টি ভুতুড়ে রেলওয়ে স্টেশন। ভূত কি আদৌ আছে ? তার সত্যি মিথ্যা বিচার আমরা করিনি, কিন্তু এলাকার বাসিন্দা এবং লোকমুখে প্রচলিত কাহিনী অনুযায়ী আমরা এই দশটি স্টেশনের তালিকা তৈরি করেছি।
হাজার হাজার মানুষের জনসঙ্গম, ট্রেনের হুইসেল, ভির আর তাড়াহুড়ার মাঝে কখনো হাসছে, কখনো কাঁদছে বা হাততালি দিচ্ছে বিভিন্ন অশরীরী ভূত বা আত্মা। ভাবতেও মজা লাগে।
আরও মজার বিষয়, এই লিস্টে আমাদের পশ্চিমবাংলার দুটি রেলস্টেশনের নাম আছে, যা আপনি একদম শেষে পাবেন।
তো বেশি কথা না বাড়িয়ে চলুন আমরা একটা নতুন অ্যাডভেঞ্চারের দিকে পা বাড়াই। আর যেকোনো নতুন পোস্ট বা আর্টিকেল এর ইমেইল নোটিফিকেশন পাওয়ার জন্য আপনি এখানে ক্লিক করতে পারেন। ক্লিক করার পর আপনার নাম ও ইমেইল দিয়ে সাবমিট করে দেবেন।
fanfact.in |
গুগলে সবাই জিজ্ঞাসা করছে Is Naini railway station haunted?
উত্তরের খোঁজে আমরাও আছি।
উত্তরপ্রদেশের নৈনি রেলওয়ে স্টেশন, ভারতের সেরা ভুতুড়ে এলাকার মধ্যে একটি। কথিত আছে এই স্টেশনের পাশেই জেলের মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত আত্মারা ঘুরে বেড়ায়।
তারা কখনো কারো ক্ষতি করে না। কাউকে বিরক্তও করে না। কিন্তু তবুও তারা আছে, যেভাবে হাওয়া আছে কিন্তু দেখা যায় না, সেভাবে ঠিক তারা আছে।
এটা আমাদের কথা নয় এলাকার লোকের কথা। এলাকার লোক বিশ্বাস করে তারা আছে, জেলে থাকাকালীন তারা তাদের জীবন খুঁইয়েছিল। মৃত্যুর পর জীবনের অপূর্ণ ইচ্ছা পূরণের জন্য তারা ঘুরে বেড়ায়। জেলে থাকার কষ্ট তারা বুঝতে পেরেছে, তাই তারা এখন চায় স্বাধীনতা। দশটি সেরা ভুতুরে রেলওয়ে স্টেশন এর লিস্টে নৈনি রেলস্টেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে নিয়েছে। যেখানে আছে মুক্তিযোদ্ধাদের ভূত। উত্তরপ্রদেশে কোন দিন গেলে অবশ্যই ঘুরে আসবেন নৈনি রেলস্টেশন থেকে।
আপনি আরও পড়তে পারেন ঃ ভারতের সেরা দশটি E-commerce website
2. লুধিয়ানা রেলওয়ে স্টেশন, পাঞ্জাব
উত্তর প্রদেশ থেকে সোজাসুজি আমরা চলে এসেছি পাঞ্জাবের লুধিয়ানা রেলওয়ে স্টেশনে। আর জানতে পেরেছি সুভাষের কথা। কে ছিল সুভাষ? লুদিয়ানা স্টেশনে তার কি কাজ?
প্রচুর পরিশ্রমী সুভাষ, নিজের কাজকে খুব ভালোবাসতো। কাজ ছিল তার একমাত্র বন্ধু। কাজ করতো কম্পিউটার রিজার্ভেশন সিস্টেম অফিসার হিসেবে এই লুদিয়ানা স্টেশনেই। কিন্তু কোন কারণে 2004 সালে মারা যান তিনি। মৃত্যুর পরও তিনি তার কাজকে ছেড়ে যেতে পারেনি। লুধিয়ানা স্টেশন এর কম্পিউটার রিজার্ভেশন সিস্টেম রুমে সুভাষের আত্মা ঘুরে বেড়ায় বলে কথিত আছে। রিপোর্ট অনুসারে সুভাষের আত্মা তিনি যেখানে কাজ করতেন সেই টেবিলে মাঝেমধ্যে এসে বসে থাকে, তবে কারো কোন ক্ষতি সে করে না। নিজের মতো নিজেই চুপচাপ বসে থাকে , সময়মতো আবার চলে যায়।
আপনি আরও পড়তে পারেন ঃ 10 টি কম্পিউটার স্কিল যা আপনার অবশ্যই জানা উচিত
3. দ্বারকা সেক্টর 9 মেট্রো স্টেশন, দিল্লি
ভগবান শ্রীকৃষ্ণের এলাকা বলে যে ভূত থাকবে না তার কোনো মানে নেই। আমরা এবার আপনাকে দিল্লির নিয়ে যাবো। দ্বারকা সেক্টর 9 মেট্রো স্টেশনে, লোকজনের বিশ্বাস এখানে একটি মহিলা ভুতের আত্মা ট্রেনের সঙ্গে দৌড়াদৌড়ি করে।
মেট্রো রেলওয়ে নেটওয়ার্কে এরকম ঘটনা কেন বেশি করে শোনা যাচ্ছে ? কে জানে!
কখনো ট্রেনের সঙ্গে ছুটে বেড়ানো, কখনো ট্রেনের দরজায় ধাক্কা দেওয়া, আবার মাঝে মধ্যে ভুতুড়ে চিৎকার করা এই সবই নাকি হচ্ছে দ্বারকা মেট্রো রেলওয়ে স্টেশনে। সবই সাধারণ যাত্রী ও নাগরিকের বয়ান। সত্যি-মিথ্যা আপনাদের বিচারাধীন।
নতুন পোস্ট বা আর্টিকেল এর ইমেইল নোটিফিকেশন পাওয়ার জন্য আপনি এখানে ক্লিক করতে পারেন। ক্লিক করার পর আপনার নাম ও ইমেইল দিয়ে সাবমিট করে দেবেন।
4. ডম্বিভলি রেলওয়ে স্টেশন, মহারাষ্ট্র
5.মুলুন্ড রেলওয়ে স্টেশন, মুম্বাই
6. এমজি রোড মেট্রো স্টেশন, গুরগাঁও
7. চিত্তর রেলওয়ে স্টেশন, অন্ধ্রপ্রদেশ
ঘটনাটি 2013 সালের। কেরালা থেকে দিল্লি যাচ্ছিল দিল্লি এক্সপ্রেস, সেই ট্রেনেই ছিল হরি সিং নামের একজন সিআরপিএফ জাওয়ান। ট্রেন যখন চিত্তর রেলওয়ে স্টেশনে দাঁড়ায় তখন হরি সঙ্গে ট্রেনের দায়িত্বরত আরপিএফ কর্মীর ও টিটিইর সঙ্গে বচসা বাধে।
ঝামেলা হাতাহাতিতে পৌঁছায় এবং হরি গুরুতর আহত হন। তারপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে দশদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর হরির মৃত্যু হয়।
তারপর থেকে অন্ধ্রপ্রদেশের চিত্তর রেলওয়ে স্টেশনে রোজ দেখা যায় হরি সিংকে।
সে ঘুরে বেড়ায় ন্যায়বিচারের সন্ধানে। তার সাথে এমন কেন করা হলো? এটাই তার প্রশ্ন।
অবশ্য সেই দায়িত্বরত আরপিএফ কর্মীদের কি হয়েছিল তা জানা যায়নি। দুটি সরকারি দপ্তরের কর্মীর মধ্যে বেঁধে যাওয়া ঝামেলা জল এতদূর গড়াতে পারে, জেনেও অবাক লাগে!
আপনাকে আরও অবাক করতে ইমেইল নোটিফিকেশন পাঠানোর অনুমতি দিন। ইমেল পাওয়ার জন্য আপনি এখানে ক্লিক করতে পারেন। ক্লিক করার পর আপনার নাম ও ইমেইল দিয়ে সাবমিট করে দেবেন।
8. বারোগ স্টেশন, সিমলা
9. রবীন্দ্র সরোবর মেট্রো স্টেশন, পশ্চিমবঙ্গ
যাত্রীরা রাত্রের দিকে রবীন্দ্র সরোবর মেট্রো স্টেশনে, ওরকম ঝাঁ-চকচকে আলো ও ভিড়ের মধ্যেও দেখতে পেয়েছে একটি আত্মা। সে নাকি ঘুরে বেড়াচ্ছিল রেলওয়ে ট্রাকের উপর দিয়ে।
রবীন্দ্র সরোবর মেট্রো স্টেশন এর মত এত জনপ্রিয় স্টেশনে কি করে ভূত বা আত্মা থাকে? সেটা আপনি নিশ্চয়ই সন্দেহ করছেন। মনে মনে ভাবছেন আমি তো নিজেই কতবার রবীন্দ্র সরোবর গিয়েছি , কই কখনো তো ভূত দেখতে পাইনি। অন্তত গা ছমছম করা উচিত ছিল।
কিন্তু হ্যাঁ অনেক যাত্রী এবং কিছু পুলিশকর্মীর বয়ান অনুযায়ী, লাস্ট মেট্রো চলে যাওয়ার পর 10:30 নাগাদ একটি আত্মাকে রেলওয়ে ট্রাক এর উপর ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। কেউ তার সঠিক পরিচয় দিতে পারে না। কিন্তু খালি চোখে দেখে তাকে ভূত বলেই মনে হয়।
একদিন না হয় অ্যাডভেঞ্চারের মজা নিয়ে আসা যাবে। রবীন্দ্র সরোবরে রাত সাড়ে দশটার পরে কি হয় দেখে আসতে হবে।
আপনার কি অবাস্তব মনে হচ্ছে রবীন্দ্র সরোবরের ঘটনাকে কমেন্টে জানান আপনার প্রতিক্রিয়া।
আর যেকোনো নতুন পোস্ট বা আর্টিকেল এর ইমেইল নোটিফিকেশন পাওয়ার জন্য আপনি এখানে ক্লিক করতে পারেন। ক্লিক করার পর আপনার নাম ও ইমেইল দিয়ে সাবমিট করে দেবেন।
আমরা গিয়েছিলাম কিছুদিন আগে বেগুনকোদর। দিনের বেলা পোড়ামাটির দেশে পাহাড়ের কোলে একটি নিরীহ স্টেশন বলেই মনে হয়, বেগুনকদরকে। আমাদের সঙ্গে অবশ্য ভুতের কোন সংযোগ হয়নি।
কিন্তু ইন্ডিয়ান রেলওয়ে নিশ্চয়ই কোন সঠিক তথ্য প্রমাণ পেয়েছিল যার কারণে টানা 42 বছর এই রেল স্টেশনটি বন্ধ ছিল। যদি কিছু নাই হবে, তাহলে কেন একটি স্টেশন তৈরি করার মাত্র পাঁচ বছর পরে তাকে বন্ধ করে দিতে হলো ?
গ্রামের লোক ও যাত্রী সাধারণের অভিযোগ স্টেশন এর উপর একটি মহিলা ভূত ঘুরে বেড়ায়। ট্রেন আসলে ট্রেনের সঙ্গে দৌড়ের পাল্লা লাগায়, ট্রেনের আগে যাওয়াই তার প্রধান লক্ষ্য। আর এই ভয়েই ট্রেনের ড্রাইভার বেগুনকদর আসার কিছু আগেই ট্রেনের গতি সাধারণের তুলনায় আরও বাড়িয়ে দেয়।
কিন্তু তারপরও 110-120 কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা স্পিডের ট্রেন হেরে যায় একটি ভূতের সামনে আর বিজয়ীর হাসি আসে অতৃপ্ত আত্মা।
তবে এখন হয়তো অতৃপ্ত আত্মা অতটাও আর অতৃপ্ত নেই। তার প্রকোপ কিছুটা হয়তো কমেছে। আর সেই কারণেই ইন্ডিয়ান রেলওয়ে নতুন করে আবার 2009 সাল থেকে স্টেশনটি চালু করেছে।
তার সঙ্গে যোগ হয়েছে অযোধ্যা পাহাড়ে ঘুরতে যাওয়া পর্যটকদের আগমন। কলকাতা থেকে অনেকে রাত্রিযাপনও করেছে, বেগুনকোদর রেলওয়ে স্টেশনে। তারা তখন কিছুই দেখতে পাইনি।
কি হয়েছে বা হচ্ছে বিচার আপনারাই করবেন আর ভূত যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে ঘুরে আসতে পারেন অযোধ্যা পাহাড়ের কোলে সুন্দর নির্মম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের রেলওয়ে স্টেশন বেগুনকোদর থেকে।