বাঙালি মানেই খাদ্যরসিক। খেতে খাওয়াতে খুব পছন্দ করি আমরা। সঙ্গে একটু আধটু মাছের ঝোল না থাকলে আমাদের তো ভালোই লাগে না।
আবার কেউ কেউ আছেন যাদের আমিষ খাবার একদমই পছন্দ নয়। কিন্তু যাই হোক, প্রায় প্রত্যেকেই আমরা সপ্তাহের কোন না কোনদিন নিরামিষ রাখি। অর্থাৎ সেদিন কোন আমিষ খাবার আমরা খাইনা। খুবই স্ট্রাইক্টলি ফলো করি আমাদের নিরামিষ খাদ্যাভ্যাসের নিয়ম।
কিন্তু জানেন কি, বাজারে রয়েছে এমন কিছু খাবার যেগুলি আপাতদৃষ্টিতে নিরামিষ বলে মনে হলেও আসলে কিন্তু সেগুলো নিরামিষ নয়। এমনই পাঁচটি খাবারের নাম আমরা আজ জেনে নেব আমাদের আজকের প্রতিবেদন নিরামিষ মনে হলেও আসলে আমিষ পাঁচটি খাবার।
1. ভোজ্য তেল
কারন আমি রান্না করি ওমেগা3 ও ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ তেল দিয়ে।
এরকম বিজ্ঞাপন আমরা মাঝেমধ্যেই দেখে বা শুনে থাকি। এই তেল যে খারাপ তা বলছি না, কিন্তু এই তেল আপনি নিরামিষ সেটা বলতে পারবেন না।
কারন আমরা জানি ওমেগা3 ও ফ্যাটি অ্যাসিডের প্রধান উৎসই হচ্ছে বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ। এখন তো আবার অনেক কম্পানি ল্যানোলিনের ব্যবহার ও শুরু করে দিয়েছে।
বলে রাখি ল্যানোলিন থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি। কিন্তু সমস্যা হলো ল্যানোলিন বেশিরভাগ সময়ই তৈরি করা হয় ভেড়ার শরীর দিয়ে।
আপেল সম্বন্ধে 7টি মজাদার এবং অবিশ্বাস্য তথ্য অবশ্যই পড়ুন
2. নান
ময়দা দিয়ে তৈরি বেচারা নান আবার কি দোষ করলো ? রাস্তায় ঢেলা গাড়িতে বিক্রি করে, খেতেও সুস্বাদু। আপাত দৃষ্টিতে দেখতে তো নিরামিষ বলেই মনে হয়।
হ্যাঁ ঠিকই। কিন্তু নান তৈরি করার সময়, অর্থাৎ নানের জন্য যখন ময়দা মাখানো হয়, তখন তাতে ডিমের ব্যবহার করা হয়। এতে নান ভাজার পর ফুলে ওঠে ও নরম হয়।
বিশ্বাস না হলে আপনি আপনার বাড়ির বড়দের কাছে জিজ্ঞাসা করতে পারেন। কখনো কখনো তো অনেকে পরোটার ময়দাতেও ডিম ব্যবহার করেন।
তাই এরপর থেকে ব্যাস্তদিনে তাড়াহুড়ো করে নান বা পরোটা খাবার আগে জিজ্ঞাসা করতে ভুলবেন না , যে এতে কি ডিম দেওয়া আছে ?
আরও পড়ুন ঃ যে কারনে আপনার প্রতিদিন মুরগীর মাংস খাওয়া একদমই উচিত নয়।
3. চুইংগাম ও চকোলেট
চুইংগাম আমার ছোটো বেলা থেকেই খুবই পছন্দের। কিন্তু বেশি খেতে ভয়ও করতো। যদি গিলে ফেলি, তাহলে কি হবে?
এখন অন্য চিন্তা মাথায় আসে, যে চুইংগামের ওই রাবারে মতো জিনিসটা কি ? সেটা কি সত্যিই রাবার নাকি।
না বন্ধুরা, রাবার হলে তো হয়েই যেতো। আমি ছোটো বেলা থেকে এ কি খেয়ে আসছি।
আসলে চুইংগামের ওই রাবারের মতো জিনিসটা আর কিছুই না, এক প্রকার জিলেটিন। এই জিলেটিন কোলাজেন নামক জিনিস প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে তৈরি করা হয়।
সংক্ষেপে বললে, গবাদি পশুর চামরা। হ্যাঁ গবাদি পশুর চামরা দিয়ে পাওয়া যায় ওই উপাদান।
নতুন করে আর বলার অপেক্ষা রাখে না যে, গবাদি পশুর চামরা কোনোভাবেই নিরামিষ নয়।
নতুন পোস্ট বা আর্টিকেল এর ইমেইল নোটিফিকেশন পাওয়ার জন্য আপনি এখানে ক্লিক করতে পারেন। ক্লিক করার পর আপনার নাম ও ইমেইল দিয়ে সাবমিট করে দেবেন।
4. বিয়ার
গরমের দিনে অনেকেই একটু শান্তিতে নিরিবিলি বন্ধুদের সঙ্গে বিয়ারের আড্ডা দিতে ভালোবাসেন।
এতে দোষের কিছুই নেই। আপনার যদি 18 বছরের উর্দ্ধে বয়স হয় , আপনি এটা করতেই পারেন।
আদতে বিয়ার খুবই জনপ্রিয় একটি পানীয়, কাঁচের গ্লাসে যখন স্বচ্ছ বিয়ার ঢালা হয়, দেখতে কি সুন্দর লাগে। সোনালী রঙের খেলা শুরু হয়ে যায় গ্লাসের মধ্যে।
কিন্তু দারান, এটা কি করছেন ?
শুনুন, বিয়ারকে স্বচ্ছ ও সোনালি করার জন্য বেশীরভাগ কম্পানি ইসিনগ্লাস নামের একটি উপাদান ব্যবহার করে। আপনি কি জানেন ইসিনগ্লাস কোথা থেকে তৈরি করা হয়? মাছের পটকা থেকে। হ্যাঁ তাই তো বলছি, যদি আপনি নিরামিষ খাবারের খোঁজে বিয়ার পান, তবে আপনার ভুল চয়েস করা হয়েছিল আজ।
ভালো লাগলে আমাদের facebook page ফলো করতে ভুলবেন না।
5. চিজ
অনেক নিরামিষ পদেই এই খাবারটি ব্যবহার করা হয়। কিন্তু জানেন কি অধিকাংশ চিজ উৎপাদনেই রেনেট নামক একটি উপাদান ব্যবহার করা হয়। এটি একটি প্রাণীজ উৎসেচক, যা পশুর পাকস্থলী থেকে পাওয়া যায়।
আজ মনে হয় খাওয়ার ইচ্ছে আর থাকবে না।
- চুইংগামে পশুর চামরা,
- তেলে সামুদ্রিক মাছ ও ভেড়ার মাংস
- বিয়ারে মাছের পটকা
বেশিরভাগ নিরামিষ পদে ব্যবহার করা হয় চিজের।চিজ তৈরিতে রোনেট একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এর এটা কোথা থেকে পাওয়া যায় ? ঠিক বলেছেন। বিভিন্ন পশুর পাকস্থলি থেকে। তাই ভেগান বা নিরামিষাসীদের জন্য চিজটাও হাত ছাড়া হয়ে গেলো।