সবাইকে শারদীয়ার আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আজকের যাত্রা । সবাই কেমন আছেন অবশ্যই কমেন্টস করে জানান।
দুর্গা মা আসছে তাই সর্বত্র শুরু হয়ে গিয়েছে পুজো প্রস্তুতি। মা দুর্গাকে নিয়ে প্রচলিত আছে নানান কাহিনী। মা দুর্গা আসলে কে ও তার জগৎজননী হয়ে ওঠা সে আর এক কাহিনী। মা দুর্গার সেই কাহিনী বলতে গেলে উঠে আসবে নানান তথ্য। সেই তথ্য জানতে হলে আপনাকে ঘাটতে হবে পুরাণও।
"তৈত্তেরীয় আরণ্যকে" প্রথম দুর্গা শব্দের উল্লেখ পাওয়া যায়। সেদিক থেকে দেখতে গেলে শব্দটা যে একটি প্রাচীন শব্দ তা নিয়ে কিন্তু কোনো সংশয় নেই।
দেবী দুর্গা আবার জগতের কল্যাণকারী তাই তিনি জগৎজননী।
তিনি ভক্তদের ধর্ম, অর্থ, কাম, মোক্ষ দান করেন বলেই তিনিই সর্ব কামার্থদায়িনী।
তিনি জগতের অন্নদাত্রী, তাই তিনি অন্নদা।
রুদ্রের ঘরনি তাই তিনি রুদ্রাণী।
শত অক্ষির (চোখ) দ্বারা তিনি জগতের সকল কিছুই দেখেন বলেই তিনি শতাক্ষী।
তিনি পরম বৈষ্ণব তাই তিনি বৈষ্ণবী,
তার অঙ্গকান্তি গৌরবর্ণা তাই তিনি গৌরী এবং
পর্বত দুহিতা তাই পার্বতী। তিনি বহু নামের অধিকারীনি।
স্বরূপত তিনি এক ও অভিন্ন এবং অনন্য শক্তির রূপে রূপান্তরে প্রকাশ হওয়ায় তিনি মহাশক্তি মহামায়া।
বিভিন্ন দেবতার তেজপুঞ্জে সৃষ্টি হয়েও দেবী সমস্ত তেজের উৎস রূপেই প্রতিভাত তেজময়ী।
মা দূর্গা মহিষাসুরকে দমন করার পর শাস্ত্রমতে মহাদেবের পায়ে প্রবেশ করে।
তাই বলা হয়ে থাকে দুর্গা আসলে রুদ্রপন্তী উমা, অম্বিকা, হৈমবতী, দুর্গা , গৌরী, ভবানীর মিলিত দৈব সত্তা।
তবে ভাবপ্রবণ বাঙালির কাছে তিনি পরিপূর্ণ ভাবেই শিবপত্নী শিবানী বা দুর্গা। তাইতো দুর্গা প্রতিমার চালচিত্রে মা দুর্গার মাথার উপরে শিব ঠাকুরের অবস্থান। সেই সঙ্গে দুর্গার দুপাশে তাঁর সন্তান সন্ততির অবস্থান। যে রূপে শারদীয়ার পুজোতে দেবী দুর্গা পুজিত হন।
দেবী দুর্গা আমাদের রক্ষাকর্ত্রী
দেবী দুর্গার স্বরূপ প্রসঙ্গে স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন-
ভারতের নারীর সর্ববিধ রবপের মধ্যে মাতৃমূর্তী সবার উপরে। মা সর্বাবস্থায় সন্তানের পাশে থাকেন। স্ত্রী-পুত্র মানুষকে ত্যাগ করতে পারে কিন্তু মা কখনও সন্তানকে ত্যাগ করতে পারেনা। আবার মাতৃশক্তিই পক্ষপাত শূন্য মহাশক্তি। মায়ের কাছে প্রতিনিয়ত অকুন্ঠ শরণাগতিই আমাদের শান্তি দিতে পারে। তাঁহার জন্যই তাহাকে ভালোবাসো ভয়ে নয় বা কিছু পাওয়ার আশায়ও নয়। তাহাকে ভালোবাসো কারণ তুমি সন্তান। যখন তাহাকে আমরা এই রূপে অনুভব করি, তখনই আমাদের মনে আসে সমত্ব ও চিরশান্তি- এটাই মায়ের স্বরূপ।
২০২৩ সালে দেবী দুর্গার আগমন (Goddess Durga Arrival)
এই বছর দেবী দুর্গার আগমন ঘোটকে, যার অর্থ ছত্রভঙ্গ
২০২৩ সালে দেবী দুর্গার আগমন গমন (Goddess Durga Departure)
উমা কৈলাসে ফিরবেন ঘোটকে, যার অর্থ ছত্রভঙ্গ
এবছর দেবীর আগমন ও গমন দুটোই ঘোটকে। যা, অশুভ ইঙ্গিত। শাস্ত্রমতে বলা হয় সপ্তমীতে দেবী দুর্গার আগমন এবং দশমিতে গমন হয়। সাধারণত প্রতি বছর সপ্তমী ও দশমী কী বার পড়ছে তার ওপর নির্ভর করে দেবীর কিসে আগমন এবং গমন সেটা বোঝা যায়। শাস্ত্রে আরও বলা আছে, কোনও বছর দেবীর আগমন ও গমন একই বাহনে হলে তা অত্যন্ত অশুভ।
২০২২ সালে দেবীর আগমন হয়েছিল গজে এবং গমন হয়েছিল নৌকায়।
লেখাটি সম্পর্কে আপনার যে কোনও মতামত আমাদের কমেন্ট করে জানান। আপনার প্রতিটি মতামতই আমাদের কাছে মহামূল্যবান।
আর যদি মনে হয় লেখাটি অন্যদেরও উপকার করবে – তবে শেয়ার করে সবাইকে জানার সুযোগ করে দিন।