অ্যানিমেশনের দেশ জাপানের বিষয়ে ৩০ টি মজাদার তথ্য।
প্রশান্ত মহাসাগরের একদম পশ্চিম কোণে ৬৮০০ টি দ্বীপ নিয়ে গড়ে ওঠা একটি ছোট্ট দেশ জাপান। আমরা সকলেই জানি প্রযুক্তিতে যাদের খুব বেশি অবদান। আর জাপানি জিনিস মানেই চোখ বুজে ভরসা করা যায়। আর জাপান শুধু প্রযুক্তিতেই নয় চিত্রকলা সাহিত্য ইত্যাদিতেও অনেক অবদান রয়েছে। তাহলে আর বেশি দেরি না করে দেখে নেওয়া যাক সূর্যোদয়ের দেশ জাপানের বিষয়ে কিছু মজাদার তথ্য।
চলুন তাহলে শুরু করা যাক,
জাপানের বিষয়ে ৩০ মজাদার তথ্য বা ফ্যাক্ট
30 INTERESTING FACT ABOUT JAPAN IN BENGALI
1. আমাদের দেশে সাধারণত দাঁত সুন্দর ও সুগঠিত করতে সবাই চেষ্টা করে ।
কিন্তু জাপানে গত কয়েক বছর ধরে প্লাস্টিক সার্জারির মাধ্যমে যুবক -যুবতীরা দাঁত কে সুগঠিত না করে বরং ত্রুটিপূর্ণ করে সৌন্দর্য আরো কমিয়ে ফেলতে শুরু করেছে।
2. জাপানের বাইরে সবচেয়ে বড় জাপানি সম্প্রদায় ব্রাজিলে রয়েছে।
3. জাপানেও প্রতি ২ লক্ষ জন এ একজন খুন হয়।
4. জাপানের শ্রম আইন অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক ভালো।
এজন্য কোন কোম্পানি চাইলেই তাদের কর্মী ছাঁটাই করতে পারে না।
যদি করে তাহলে, তাদের মোটা অংকে টাকা ফাইন গুনতে হবে!
তাই বলে কোম্পানির মালিকপক্ষ কিন্তু বোকা নন। তার জন্য তারা যে কর্মীকে ছাঁটাই করতে চান, তাকে সারাদিন বিরক্তিকর কাজ দিয়ে থাকে।
যেমন, হতে পারে তার জন্য সারাদিন তাকে সিসিটিভির সামনে বসিয়ে রাখা। আর এসবের জন্য আবার আলাদা শাস্তি কক্ষ রয়েছে বিভিন্ন কম্পানিতে।
5. জাপানি ৯০% মোবাইল ফোন জল নিরোধক বা ওয়াটার প্রুফ। কারন জাপানের যুবক-যুবতীরা স্নান করতে করতে মোবাইল ব্যবহার করতে পছন্দ করে।
6. টোকিও শিনজুকু স্টেশনটি জাপানের প্রধান স্টেশন, এই ব্যস্ততম স্টেশন দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ২ লাখের বেশি লোকজন যাতায়াত করে।
7. সন্তান দত্তক নেওয়া বা পালক সন্তান গ্রহণ করা তো পুরো বিশ্বেই রয়েছে।
জাপানের মোট দত্তক গ্রহণের প্রায় শতকরা ৯৮ ভাগেরই বয়স ২০ - ৩০ বছর!
অর্থাৎ জাপানীরা প্রাপ্তবয়স্কদের দত্তক নিতে পছন্দ করে!
বড় ব্যবসায়িক পরিবার কিন্তু কোনো সন্তান নেই, তখন তারা দত্তক নেয়।
8. জাপানি আবিষ্কৃত 'haiku' কবিতাটি কেবল তিনটি লাইনের মধ্যে রয়েছে এবং এটি বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ কবিতা।
9. জাপান অনেক উন্নত দেশ। কোনো সন্দেহ নেই।
হয়তো ভাবতে পারেন তাদের জমি অনেক উর্বর। যেখানে প্রচুর ফসল ফলে। কিন্তু তা নয়।
জাপানের প্রায় ৭০% জমিই পাহাড়ি। তাছাড়া জাপানে প্রায় ২০০ এরও বেশি আগ্নেয়গিরি রয়েছে।
10. জাপানে স্টুডেন্টদের খাওয়ার জন্য আধঘন্টার বিরতি দেওয়া হয় সঠিক হজমের জন্য। কারণ তারা স্টুডেন্টদের জাতির ভবিষ্যৎ মনে করে।
11. নির্ধারিত সময় কাজ করার পরও "ওভারটাইম" নামের একটি শব্দ প্রচলিত রয়েছে দুনিয়া জুড়ে। শুধুমাত্র জাপানে এই শব্দের কোন অর্থ নেই। জাপানিরা স্বভাবগতভাবেই অফিসের সময় শেস হওয়ার পরও দীর্ঘ সময় পড়ে থাকে কাজ নিয়ে। আর কোনো ওভারটাইম ও দেওয়া হয় না।
12. জাপানীরা খাওয়ার অপচয় করে না। রেস্টুরেন্টে গেলে দেখবেন। মানুষের যতটা দরকার তার থেকে বেশি কখনো নেয় না। আর যা নেয়, পুরোটা শেষ করে।
13. জাপানি মোট প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে ২০% বইই কমিক্স বই।
14. জাপানে 3,000 এরও বেশি ম্যাকডোনাল্ডসের রেস্তোরাঁ রয়েছে। যেটি যুক্তরাষ্ট্রের পর সবচেয়ে বেশি।
15. জর্জ লুকাসের বিখ্যাত চলচ্চিত্র স্টার ওয়ারের মূল ভিত্তি ছিল, জাপানি পরিচালক আকিরা কুরোসাওয়া দ্বারা পরিচালিত চলচ্চিত্র "দ্যা লুকড ফোর্ট্টা।
16. জাপানে সাক্ষরতার হার শতকরা ১০০ শতাংশ।
তাদের পত্রিকায় আমাদের দেশের মতো দুর্ঘটনা, রাজনীতি, সিনেমার সংবাদ, অসামাজিক, দেশবিরোধী ইত্যাদি সংবাদ ছাপানো হয় না। সেখানে শুধু প্রয়োজনীয় ও আধুনিক জগত সম্পর্কে সংবাদ ছাপা হয়।
17. জাপানে আবর্জনা ক্লিনারদের হেলথ ইঞ্জিনিয়ার বলা হয়। যারা মাসিক ৫০০০-৮০০০ ডলার বেতন পায়।
18. জাপানি ভাষায় "জাপান" শব্দের অর্থ "নিপ্পন" অর্থাৎ "উদীয়মান সূর্যের ভূমি" অর্থাৎ, জাপান হল সেই দেশ যে দেশের মানুষ ভোরের সূর্য প্রথমে দেখতে পায়। কিন্তু এর কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা এখনো পাওয়া যায়নি।
19. চেরি ফুল (charry blossom) জাপানের জাতীয় ফুল।
20. জাপানি শিক্ষাজীবনে প্রথম ৩ বছর কোন পরীক্ষা হয় না। কারণ তারা মনে করে লেখাপড়া চরিত্র গঠনের জন্য, পরীক্ষা নেওয়ার জন্য না।
21. জাপানিরা রাস্তায় ময়লা ফেলে না। জাপানীরা ব্যাগে করে ছাইদানি নিয়ে ঘোরে। জাপানের রাস্তায় সিগারেটের ছাই ফেলা পর্যন্ত নিষিদ্ধ।
22. জাপানের কোন প্রকৃতিক সম্পদ নেই। সেখানে প্রতি বছর শত শত ভূমিকম্প হয় তবু তারা পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি।
23. জাপান হলো বিশ্বের একমাত্র দেশ যেখানে পারমাণবিক বোমা নামক অমানবিক বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছিল। হিরোশিমায় বোমা মারার ১০ বছরের মধ্যে হিরোশিমা তার আগের জায়গায় ফিরে আসে।
কিন্তু জাপানের সেই হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে এখনো আগের মতো ফসল ফলে না এখনো বিকলাঙ্গ বাচ্চা জন্মায়।
24. জাপান হলো পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেখানে কাজে এক মিনিট দেরি করে আসা কেও একটি অপরাধ বলে ধরা হয়!
25. জাপানি ট্রেন দেরি করে আসার গড় সময় বছরে ৭ সেকেন্ড, তারা প্রতিটা সেকেন্ডের হিসাব করে চলে।
26. জাপানের রেস্টুরেন্ট ও ট্রেনে মোবাইল ফোন ইউজ করা নিষেধ।
27. জাপানিদের পুরো জীবনটাই কাটে কাজের প্রতি বিপুল উদ্দীপনা, এবং পরিবার ও দেশের কল্যাণে কাজ করে।
28. জাপানের শিক্ষাজীবনে প্রথম ৬ বছর শেখানো হয় নৈতিকতা ও মানুষের সাথে কিভাবে চলতে হয় ও ব্যবহার করতে হয় ।
29. আপনি কি জানেন জাপানের রাস্তায় কোন ডাস্টবিন থাকেনা! এমন কি দেশটির কোথাও অন্যান্য দেশের মতো নোংরা ভাগাড় দেখা যায় না।
কেন জানেন? জাপানিরা ঐ সব বর্জ্য রিসাইকেল করে। যেগুলোর পুনব্যাবহার করা সম্ভব না, সেগুলো খুব নিপুণভাবে একটি পদ্ধতির মাধ্যমে ধ্বংস করে ফেলা হয়।
30. "কারোশি" যার অর্থ "অতিরিক্ত কাজে চাপে মৃত্যু" জাপানে প্রতি বছর কম করে ১০,০০০ জন মানুষ মারা যায় শুধুমাত্র কাজের চাপের জন্য ।
ডায়াগনোসিস এর তাদের মৃত্যুর কারণ লেখা হয়, "কারোশি"।
আজ এই পর্যন্তই। কেমন লাগল কমেন্টস করতে ভুলবেন না। শেয়ার করুন আপনার বন্ধুদের সাথে।